প্রাইমারি সার্কুলার কবে হবে? জানুন সম্ভাব্য সময়
শিক্ষকতা এমন একটি মহৎ পেশা যেখানে দায়িত্ব ও মর্যাদা একসাথে যুক্ত থাকে। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কোমলমতি শিশুদের হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করেন। শিশুরা প্রথম সামাজিক আচরণ, নৈতিকতা এবং মানবিকতার পাঠ শিক্ষকের কাছ থেকেই শিখতে শুরু করে। তাই এই পদে নিয়োগ পাওয়া শুধু একটি চাকরির সুযোগ নয়, বরং সমাজ ও জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করার সমান।
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে একটি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সেখানে একজন শিক্ষক পুরো গ্রামের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেন। অনেক তরুণ তরুণী আছেন যারা শহরে পড়াশোনা শেষ করে নিজ গ্রামের স্কুলে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের সমাজকে শিক্ষার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতে এবং গ্রামের মানুষকে উপকৃত করতে চান। অনেকেই জানতে চান যে প্রাইমারি সার্কুলার কবে হবে। সার্কুলার এখনও প্রকাশিত হয়নি তবে খুব শীঘ্রই হবে। কবে হতে পারে সে সম্পর্কে আপনাদের জানাতেই আমাদের আজকের এই লেখাটি।
আরও পড়ুনঃ জনমত গঠনের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহন কি?
প্রাইমারি সার্কুলার কবে হবে?
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ একটি বড় পরিসরে প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে দেশের বেকারত্বের হার কমছে এবং অনেকেই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন। আপনিও যদি নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে চান, তবে এখনই আবেদন করার সঠিক সময়।
নতুন বিধিমালায় সহকারী শিক্ষক পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। পূর্বে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও, বর্তমানে তা শিথিল করে সমতা আনা হয়েছে। যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি সম্পন্ন হতে হবে। ডিগ্রি ৩ বছর মেয়াদী হোক বা ৪ বছর মেয়াদী, উভয়ই গ্রহণযোগ্য।
বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের জন্য ২০ শতাংশ পদ সংরক্ষিত থাকবে। বাকি ৮০ শতাংশ পদ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নতুন নিয়মে লিখিত পরীক্ষা হবে ৯০ নম্বরের এবং মৌখিক পরীক্ষা থাকবে ১০ নম্বরের। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪৫ এবং মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর ৫ নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রাইমারি সার্কুলার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ সমাজের কাছে প্রাইমারি সার্কুলার একটি অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। প্রতি বছর হাজার হাজার প্রার্থী এই সার্কুলারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। এই নিয়োগ শুধু একটি চাকরি নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার এক মহান ব্রত। বর্তমানে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও, নতুন করে সৃষ্ট এবং শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DPE) নতুন করে বিশাল আকারের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দ্বারপ্রান্তে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DPE) সম্মিলিতভাবে শূন্যপদ পূরণের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান। প্রধান শিক্ষকের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার ইঙ্গিত বহন করে।
বিধিমালা সংশোধন প্রক্রিয়া এবং কিছু ত্রুটি সংশোধন হতে দীর্ঘ হচ্ছে, তাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে। সংবাদে বলা হয়েছে, বিধিমালা চূড়ান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সার্কুলারটি সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর এর মধ্যে প্রকাশ হতে পারে।
প্রাইমারি সার্কুলারে আবেদন করার শর্তঃ
বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মরত আছেন। আপনিও যদি এ ক্ষেত্রে কাজ করার আগ্রহ রাখেন এবং নিজের জন্য একটি সুশৃঙ্খল ও সুন্দর জীবন গড়তে চান, তবে এখনই আবেদন করতে পারেন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি একজন বেকার মানুষের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। প্রত্যেকেই একটি চাকরির মাধ্যমে স্বনির্ভর হতে চায় এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এই নিয়োগের সুযোগ সেই লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হতে পারে।
আবেদন করার জন্য অবশ্যই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত বয়সসীমার মধ্যে থাকতে হবে। নির্ধারিত বয়সের শর্ত পূরণ না করলে আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। একইভাবে, আবেদনপত্রে প্রদত্ত তথ্য যদি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক না হয়, তবে সেটিও বাতিল হয়ে যাবে। তাই আবেদন করার সময় অবশ্যই নির্ভুল তথ্য প্রদান করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের সকল শর্ত যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
FAQs
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা কত নির্ধারণ করা হয়েছে?
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্বে এই বয়সসীমা ছিল ৩০ বছর। কিন্তু সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন করে এটি ৩২ বছর করা হয়েছে। এই বয়সসীমা সাধারণ প্রার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থীদের জন্য বা অন্য বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা সংক্রান্ত তথ্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা থাকে।
নতুন সার্কুলার কি কোথায় প্রকাশিত হবে?
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (DPE) সরকারি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট dpe.gov.bd তেই নতুন প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সার্কুলার প্রকাশ করা হবে। পূর্বের সবগুলো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এখানেই প্রকাশিত হয়েছে এবং আবেদনও অনলাইনে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়েছে। তাই নতুন সার্কুলারও পুরোনো বিজ্ঞপ্তির মতো অনলাইনে প্রকাশিত হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়াও অনলাইনেই সম্পন্ন করতে হবে।
শেষ কথা
প্রাইমারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ সার্কুলার বাংলাদেশের হাজারো চাকরিপ্রার্থীর জন্য একটি বহুল প্রতীক্ষিত বিষয়। নতুন নিয়োগ বিধিমালা ইতিমধ্যেই প্রণয়ন করা হয়েছে, তবে কিছু সংশোধনী শেষ হওয়ার পরই সার্কুলার প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা না হলেও ধারণা করা যায়, শিগগিরই প্রার্থীরা সার্কুলারটি দেখতে পাবেন। তাই আগ্রহী প্রার্থীদের উচিত নিয়মিতভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট dpe.gov.bd এবং জাতীয় দৈনিকগুলোতে নজর রাখা। তবে আমাদের ওয়েবসাইট এও পেয়ে যাবেন সার্কুলারটি প্রস্তুতি অব্যাহত রেখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে থাকার সুযোগ পাওয়া যাবে।
